কর্মক্ষেত্রে কোভিড-১৯ সংক্রমণ প্রতিরোধের লক্ষ্যে ‘কর্মক্ষেত্রে কোভিড-১৯ প্রতিরোধ ও প্রতিকারে পেশাগত সুরক্ষা ও স্বাস্থ্য বিষয়ক নির্দেশিকা’ প্রণয়ন করেছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর (ডাইফ)। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর শ্রম ভবনে উক্ত নির্দেশিকার মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
নির্দেশিকায় কর্মক্ষেত্রে কোভিড-১৯ প্রতিরোধে সরকার, শ্রমিক, মালিক, সেইফটি কমিটি ও শ্রমখাত সংশ্লিষ্ট সকল স্টেকহোল্ডারগণের জন্য নির্দেশনা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই নির্দেশিকায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক শ্রমমানদণ্ড বিবেচনায় নিয়ে সকল অংশীজনদের জন্য সুপারিশ এবং কর্মপস্থা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব কে এম আব্দুস সালাম বলেন, কোভিড-১৯ মোকাবেলায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাকে অনুসরণ করে আন্তর্জাতিক শ্রমমানদণ্ড বজায় রেখে এই নির্দেশিকা প্রণয়ন করা হয়েছে। এই নির্দেশিকা কর্মক্ষেত্রে বাস্তবায়ন করা এখন চ্যালেঞ্জ। আসন্ন শীতে কোভিড সংক্রমণের সেকেন্ড ওয়েভ থেকে শ্রমখাতকে রক্ষা করার জন্য আমাদেরকে কার্যকর প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।
ডাইফ মহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত সচিব) জনাব শিবনাথ রায় বলেন, কোভিড-১৯ সৃষ্ট পরিস্থিতিতে আমরা বাংলাদেশ শ্রম আইনের ৫ম, ৬ষ্ঠ, ৭ম ও ৮ম অধ্যায় মোতাবেক বিশেষ পরিদর্শন চেকলিস্ট প্রণয়নের মাধ্যমে কলকারখানায় বিশেষ পরিদর্শন কার্যক্রম পরিচালনা করেছি। এর মাধ্যমে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কারখানায় স্বাস্থ্যকর ও শোভন কর্মপরিবেশ বজায় রাখা সহজতর হয়েছে। ডাইফের পরিদর্শকগণের সার্বক্ষণিক কর্মপ্রচেষ্টাসহ সকলের সম্মিলিত কার্যপ্রবাহে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ তুলনামূলকভাবে প্রশমন করা সম্ভব হয়েছে।
জনাব শিবনাথ রায় বলেন, সকল কারখানা ও প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, আইএলও এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুসরণ করে দেশের শ্রম খাতের জন্য উপযোগী করে আন্তর্জাতিক মানের এই গাইডলাইন প্রস্তুত করা হয়েছে, যা কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতকরণে বাংলাদেশে একটি মাইলফলক। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সকল দপ্তর ও সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয়, দপ্তর এই গাইডলাইন অনুসরণ করলে শ্রমখাতে কোভিড-১৯ সংক্রমণ প্রতিরোধ সম্ভব হবে বলে আমার বিশ্বাস।
উল্লেখ্য, গত ৯ জুন ২০২০ জাতীয় শিল্প, স্বাস্থ্য ও সেইফটি কাউন্সিল কর্তৃক উক্ত নির্দেশিকা অনুমোদিত হয়। ইতোমধ্যে উক্ত কাউন্সিলের সুপারিশ অন্তর্ভুক্তকরণসহ আরও ছয়টি পরিশিষ্ট সংযুক্ত করার মাধ্যমে নির্দেশিকাটিকে আরও তথ্যসমৃদ্ধ করা হয়েছে। মুজিববর্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে উক্ত নির্দেশিকাকে ১০০ পৃষ্ঠায় রূপদান করা হয়েছে। উক্ত নির্দেশিকা প্রণয়নে কারিগরি সহযোগিতা প্রদান করেছে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)। নির্দেশিকার মোট ২৫ হাজার কপি শ্রমিক, মালিক এবং শ্রমখাত সংশ্লিষ্ট সকল স্টেক হোল্ডারগণকে বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে। কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের ২৩ টি উপমহাপরিদর্শকের কার্যালয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন কারখানায় উক্ত গাইডলাইন প্রেরণ করা হবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব কে এম আলী আজম এবং কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের পদস্থ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপমহাপরিদর্শক (সেইফটি) জনাব মোঃ কামরুল হাসান।