Wellcome to National Portal
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ৩rd জুলাই ২০১৮

পবা উপজেলা লোড আনলোড কুলি শ্রমিক ইউনিয়ন কর্তৃক মহামান্য সুপ্রীম কোর্টে দায়েরকৃত রিট পিটিশন ১৭৬১২০১৭ মামলার রায়ে আদালতের ছয় দফা নির্দেশনা


প্রকাশন তারিখ : 2018-06-26

কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের দায়িত্ব হচ্ছে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের কল্যাণ নিশ্চিত করা, বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এবং বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা, ২০১৫ বাস্তবায়ন এবং কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এ প্রেক্ষিতে উল্লেখ করা যায় যে বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর ধারা ৭৪ অনুযায়ী কোন প্রতিষ্ঠানে কোন শ্রমিককে তার ক্ষতি হতে পারে এমন কোন ভারী জিনিস উত্তোলন, বহন অথবা নাড়াচাড়া করতে দেয়া যাবে না। বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা, ২০১৫-এর বিধি ৬৩ অনুযায়ী কোন প্রতিষ্ঠানের কোন পুরুষ বা মহিলাকে যথাক্রমে ৫০ কেজি ও ৩০ কেজি ওজনের অতিরিক্ত ওজনবিশিষ্ট কোন দ্রব্য, যন্ত্রপাতি, হাতিয়ার বা সরঞ্জাম কারো সাহায্য ব্যতীত হাতে বা মাথায় করে উত্তোলন, বহন বা অপসারণের উদ্দেশ্যে নিয়োগ করা যাবে না। বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা ২০১৫-এর বিধি ৬৮(ট) অনুযায়ী ৫০ কেজির অতিরিক্ত ওজনসম্পন্ন পণ্যের কোন গাঁট গুদামে উঠানো, সাজানো ও গুদামজাতকরণ এবং জাহাজ বা অন্য কোন পরিবহণে বোঝাই করার কাজ বিপজ্জনক চালনা হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশের কোল্ড স্টোরেজে কুলি শ্রমিকদের দ্বারা ৮০-১২০ কেজি ওজনের ভারী আলুর বস্তা বহন ও পরিবহন করানো বিদ্যমান শ্রম আইন ও বিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন ও এটি বে-আইনী। কোল্ড স্টোরেজে কুলি শ্রমিক দ্বারা ৮০-১২০ কেজির আলুর বস্তা মাথা বা কাঁধে বহন করা হলে বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক ব্যধি দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত ওজন বহন করলে স্বল্পমেয়াদি এবং দীর্ঘমেয়াদী শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর মাধ্যমে শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত জটিলতা, মেরুদন্ডে আঘাত, হাটু ও কাঁধে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে কুলি শ্রমিক অসুস্থ হতে পারে এমনকি এটি মৃত্যুর কারণও হতে পারে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা কর্তৃক ৫৫ কেজির বেশি ওজন বহনের ক্ষেত্রে যান্ত্রিক পদ্ধতি অবলম্বনের কথা বলা হয়েছে।

পবা উপজেলা লোড আনলোড কুলি শ্রমিক ইউনিয়ন কর্তৃক মহামান্য সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে দায়েরকৃত রিট পিটিশন ১৭৬১/২০১৭ মামলার রায় গত ৫ মার্চ ২০১৮ তারিখে প্রদান করা হয়। উক্ত রায়ে রেসপনডেন্টগণের প্রতি আদালত ছয় দফা নির্দেশনা প্রদান করে। আদালতের নির্দেশনাসমূহ নিম্নরূপ:-

১. বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬-এর ধারা ৩১৯(১)(গ) অনুসারে কোল্ড স্টোরেজে কুলি শ্রমিকগণ দ্বারা শ্রম আইন লঙ্ঘন করে অতিরিক্ত ওজনের আলুর বস্তা বহন করা হচ্ছে কিনা সেজন্য প্রয়োজনীয় অনুসন্ধান বা পরীক্ষণ পরিচালনা করা।

২. বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা, ২০১৫-এর বিধি ৩৫১(১)(ক) অনুযায়ী শ্রম আইন ও বিধিমালা দ্বারা নিশ্চিত করা কোন অধিকার লঙ্ঘনের ব্যাপারে কোন পক্ষ হতে অভিযোগ প্রাপ্ত হলে তা প্রাপ্তির ১০ কর্মদিবসের মধ্যে অনুসন্ধান ও তদন্ত করা এবং আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট পক্ষকে নির্দেশ প্রদান করা এবং উক্ত পক্ষ নির্দেশ পালনে ব্যর্থ হলে আদালতে অভিযোগ দায়ের করা।

৩. বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা, ২০১৫-এর বিধি ৩৫১(১)(ক) অনুযায়ী অতিরিক্ত ওজন বহন করানো হলে অসৎ শ্রম আচরণের দায়ে শ্রম আদালতে অভিযোগ দায়ের করা।

৪. বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা, ২০১৫-এর বিধি ৩৫০-(চ) এবং ৩৫১ (ঘ) অনুযায়ী আইন ও সংশ্লিষ্ট বিধিমালা, শ্রমিক অধিকার সম্পর্কিত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দলিলাদি বা কনভেনশন বা ঘোষণা যেগুলো শ্রমিক ও শ্রমখাত সংশ্লিষ্ট এ সম্পর্কিত প্রচার প্রচারণা ও প্রয়োজনে শ্রম আদালতে অভিযোগ দায়ের।

৫. বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা, ২০১৫-এর বিধি ৩৫০-(ছ) এবং ৩৫১ (ঙ) অনুযায়ী আইন ও সংশ্লিষ্ট বিধিমালা, শ্রমিক অধিকার সম্পর্কিত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দলিলাদি বা কনভেনশন বা ঘোষণা, শ্রম খাত ও শ্রমিক সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি নিয়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষসমূহের জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সচেতনতা, প্রচার-প্রচারণা ও কর্মশালার আয়োজন করা।

৬. বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬-এর ধারা ৩০৯ এবং ৩১৫ এর আলোকে অনুমোদিত ওজনের অতিরিক্ত ওজনের  আলুর বস্তা উঠা নামা করানো, পরিবহনের মাধ্যমে কুলি শ্রমিকদের কোন ক্ষতি হলে এই ধরনের বিপজ্জনক চালনার বিষয়টি যাতে মহাপরিদর্শক বা তার কোন অধস্তন কর্মকর্তার নিকট রিপোর্ট করা যায় তা নিশ্চিত করা এবং এ ধরনের বিপজ্জনক পরিণতির ফলে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা।